Log in
English

গুরুর ভূমিকা: শাস্ত্র ও সাধুজনের দৃষ্টিভঙ্গি

Jun 8th, 2025 | 6 Min Read
Blog Thumnail

Category: Spirituality

|

Language: Bangla

গুরু পূর্ণিমা হলো একটি গভীর আধ্যাত্মিক তাৎপর্যের দিন, যা আমাদের আধ্যাত্মিক শিক্ষক, গুরুকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য উৎসর্গীকৃত। একজন পথ প্রদর্শক হিসেবে, গুরু জ্ঞান প্রদানে, অজ্ঞতা নিবারণে এবং শিষ্যদের মুক্তির পথে পরিচালনা করেন। আত্মার স্বভাব হলো জ্ঞানার্জন, কারণ এটি পরম সত্তার একটি ক্ষুদ্র অংশ। এই পরম সত্তাকে বলা হয় সৎ-চিৎ-আনন্দ (অস্তিত্ব, চেতনা এবং আনন্দ)। সৎ-চিৎ-আনন্দ ব্রহ্মের অংশ হওয়ায় আত্মা চিরন্তন জ্ঞান, চেতনা ও আনন্দ অনুসন্ধান করে, কিন্তু তা কীভাবে অর্জন করা যায় তা জানে না। এমন পরিস্থিতিতে বেদ নির্দেশ দেয় যে, সৎ-চিৎ-আনন্দ ব্রহ্ম অনুসন্ধানকারীর প্রথম কাজ হলো একজন গুরুর সন্ধান করা।

শাস্ত্র জুড়ে গুরুর গুরুত্ব বিশেষভাবে উল্লেখ রয়েছে। ছান্দোগ্য উপনিষদে বলা হয়েছে যে —
आचार्यवान् पुरुषो वेदः।
আচার্যবান পুরুষো বেদঃ।
অর্থ : "শুধুমাত্র একজন গুরুর মাধ্যমেই আপনি বেদ বুঝতে পারবেন।"

শ্রীমদ্ভাগবতমে বলা হয়েছে —
तस्माद् गुरुं प्रपद्येत जिज्ञासु: श्रेय उत्तमम् ।
शाब्दे परे च निष्णातं ब्रह्मण्युपशमाश्रयम् ॥

তস্মাদ গুরুং প্রপদ্যেত জিজ্ঞাসুঃ শ্রেয় উত্তমম্ ।
শাব্দে পরে চ নিষ্ণাতং ব্রহ্মণ্যুপশমাশ্রয়ম্ ॥
(ভাগবত ১১-৩-২১)
অর্থ : "অতএব, যে চরম মঙ্গল কামনা করে, তার উচিত এমন একজন গুরুর শরণাপন্ন হওয়া, যিনি বেদবিদ্যা ও পরম সত্য বিষয়ে সুপণ্ডিত এবং যিনি নিজে পরম সত্যের আশ্রয় গ্রহণ করেছেন।"

ভগবদ্গীতায় শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলেন —
तद्विद्धि प्रणिपातेन परिप्रश्नेन सेवया |
उपदेक्ष्यन्ति ते ज्ञानं ज्ञानिनस्तत्त्वदर्शिन: ||

তদ্বিদ্ধি প্রণিপাতেন পরিপ্রশ্নেন সেবয়া।
উপদেক্ষ্যন্তি তে জ্ঞানং জ্ঞানিনস্তত্ত্বদর্শিনঃ॥
(গীতা ৪.৩৪)
অর্থ : "সত্যকে জানতে হলে একজন আধ্যাত্মিক গুরুর শরণাপন্ন হও। বিনয় ও শ্রদ্ধার সঙ্গে তাঁকে জিজ্ঞাসা কর এবং সেবার মাধ্যমে তাঁকে সন্তুষ্ট কর। এমন এক জ্ঞানপ্রাপ্ত মহাপুরুষই তোমাকে সেই পরম জ্ঞান প্রদান করতে সক্ষম, কারণ তিনি সত্যকে প্রত্যক্ষ করেছেন।"

অতএব, গুরুর ভূমিকা এক আত্মার যাত্রায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন ভাগবত পুরাণে বলা হয়েছে —
नैषां मतिस्तावदुरुक्रमाघ्रिं स्पृशत्यनर्थापगमो यदर्थः।
महीयसां पादरजोऽभिषेकं निष्किश्चचनानां न वृणीत यावत् ।।

নৈষাং মতিস্তাবদুরুক্রমাঘ্রীম স্পৃশত্যনর্থাপগমো ইয়দর্থঃ।
মহীয়সাম পাদরজোঽভিষেকম নিষ্কিশ্চচনানাম্ ন ব্রিণীত যাবৎ॥
(ভাগবত ৭.৫.৩২)
অর্থ: "যতক্ষণ না আমরা বস্তুগত আকাঙ্ক্ষামুক্ত কোনো সাধুজনের পদধূলিতে নিজেকে স্নান করাই, ততক্ষণ পরম ঈশ্বরের চরণস্পর্শ, যা সমস্ত দুঃখ-দুর্দশা দূর করে, আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।"

ইতিহাস জুড়ে সাধুগণও গুরুর প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। আদি জগদগুরু শঙ্করাচার্য বলেন —
यावत् गुरुर्न कर्तव्यो तावन्मुक्तिर्न लभ्यते।
যাবৎ গুরুর্ন কর্তব্যো তাবন্মুক্তির্ন লভ্যতে।
অর্থ: "যতক্ষণ না আপনি একজন গুরুর প্রতি আত্মসমর্পণ করছেন, ততক্ষণ মুক্তি লাভ সম্ভব নয়।"

গোস্বামী তুলসীদাস বলেন —
बिनु गुर होइ कि ग्यान, ग्यान कि होइ बिराग बिनु।
गावहिं बेद पुरान, सुख कि लहिअ हरि भगति बिनु॥

বিনু গুর হোই কি জ্ঞান, জ্ঞান কি হোই বিরাগ বিনু।
গাবহিঁ বেদ পুরাণ, সুখ কি লহিয় হরি ভগতি বিনু॥
অর্থ: "গুরু ছাড়া জ্ঞান নেই; জ্ঞান ছাড়া বৈরাগ্য নেই। বেদ ও পুরাণ জপ করেও যদি শ্রীহরির প্রতি ভক্তি না থাকে, তবে পরম সুখ লাভ সম্ভব নয়।"

গুরুর মাহাত্ম্য: কবীর, রামায়ণ ও শ্রী কৃপালুজী মহারাজের উপদেশ

বেদ ও উপনিষদ থেকে শুরু করে রামায়ণ, এবং সকল যুগের সাধু-সন্তগণ গুরুর মাহাত্ম্য ও গুরুত্বের স্তুতি করেছেন। সন্ত কবীর বলেন —
गुरू गोविन्द दोऊ खड़े, काके लागूं पांय।
बलिहारी गुरू अपने गोविन्द दियो बताय।।

গুরু গোবিন্দ দোউ খড়ে, কাকে লাগুঁ পাঁয়।
বলিহারি গুরু অপনে গোবিন্দ দিও বাতায়॥
অর্থ: "গুরু ও গোবিন্দ দুজনেই আমার সম্মুখে বিদ্যমান; কার চরণে আমি প্রথম প্রণাম জানাই? আমি আমার গুরুর প্রতি কৃতজ্ঞ, কারণ তিনিই আমাকে গোবিন্দের দর্শন করিয়েছেন।"

জগদগুরু শ্রী কৃপালুজী মহারাজ লিখেছেন —
हरि कृपा गुरु मिले, गोविंदा राधे।
गुरु कृपा हरि मिले, सबको बता दे।।

হরি কৃপা গুরু মিলে, গোবিন্দ রাধে।
গুরু কৃপা হরি মিলে, সবকো বাতা দে॥
অর্থ: "ঈশ্বরের কৃপায় একজন প্রকৃত গুরুর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়, এবং সেই গুরুর করুণা দ্বারা মানুষ ঈশ্বরের সান্নিধ্যে পৌঁছায়। এই আধ্যাত্মিক সত্য সবাইকে বুঝিয়ে বলো।"

রামচরিতমানসের সুন্দর কাণ্ডে বিভীষণ রচিত একটি অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর শ্লোক আছে। বিভীষণ, যিনি জন্মগতভাবে একজন রাক্ষস হলেও, শ্রীরামের ভক্ত ছিলেন। তাঁর ভক্তির সত্ত্বেও বিভীষণ নিশ্চিত ছিলেন না যে তিনি শ্রীরামের কৃপা অর্জন করতে পারবেন কিনা। কিন্তু যখন হনুমান, যিনি শ্রীরামের শ্রেষ্ঠ ভক্ত এবং অত্যন্ত বিদ্বান ও জ্ঞানী ব্যক্তি, মা সীতার সন্ধানে লঙ্কায় পৌঁছে বিভীষণের বাসভবনে আসেন, তখন বিভীষণ নিশ্চিত হন যে শ্রীরাম তাঁকে পথ প্রদর্শনের জন্য হনুমানকে পাঠিয়েছেন। হনুমানের কৃপায় বিভীষণ শ্রীরামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং এটা স্পষ্ট হয় যে শ্রীরামের ঐশ্বরিক কৃপার দ্বারা বিভীষণ তাঁর গুরু হনুমানের সাক্ষাৎ লাভ করেছেন। তখন বিভীষণ তাঁর উপলব্ধি নিচের শ্লোকের মাধ্যমে প্রকাশ করেন —
अब मोहि भा भरोस हनुमंता,
बिनु हरि कृपा मिलहि नहि संता।

অব মোহি ভা ভরোস হনুমন্তা,
বিনু হরি কৃপা মিলহি নহি সন্তা।
অর্থ: "কিন্তু হে হনুমান! এখন আমি নিশ্চিত যে শ্রীরামের কৃপা আমার ওপর আছে, কারণ হরির কৃপা ছাড়া কেউ সাধুর সঙ্গ পায় না।"

আত্মার চূড়ান্ত লক্ষ্য হল সেই অসীম, চিরন্তন আনন্দের অধিকারী হওয়া, যা শুধুমাত্র ঈশ্বরের প্রতি অপরিসীম প্রেম এবং চিরন্তন সেবার মাধ্যমে লাভ করা সম্ভব। এই দিব্য প্রেম লাভের একমাত্র উপায় হল ঈশ্বরের কৃপা, যা তাঁর অনুগ্রহ ছাড়া কখনোই অর্জন করা সম্ভব নয়। একজন ব্যক্তি ঈশ্বরের কৃপা আকর্ষণ তখনই করতে পারে, যখন সে সম্পূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ করে তাঁর পবিত্র পদতলে। তবে এই আত্মসমর্পণ একমাত্র সম্ভব হয় যখন মন সম্পূর্ণভাবে পরিশুদ্ধ হয়। এই পরিশুদ্ধি অর্জিত হয় গুরুর নির্দেশনায়, ভক্তিপূর্ণ সাধনার মাধ্যমে। গুরুই সেই পথপ্রদর্শক, যিনি আত্মার গভীর পরিশুদ্ধি সাধন করে ঈশ্বরের সত্যিকারের দর্শন লাভের পথ খুলে দেন।

শ্রী কৃপালুজী মহারাজ তাঁর 'জ্ঞাতব্য, জ্ঞান তত্ত্ব' গ্রন্থে গভীর আধ্যাত্মিক বোধ ও পরম সত্যের ক্রমবিন্যাসকে সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন —
सकल दुख का मूल है इक हरि विमुखता प्यारे।
हरिहिं सन्मुखता है याकी एक औषधि प्यारे।
সকল দুঃখ কা মূল হে ইক হরি বিমুখতা পেয়ারে।
হরিহিঁ সন্মুখতা হে যাকী এক ঔষধি পেয়ারে।
প্রথমে, শ্রী কৃপালুজী মহারাজ ব্যাখ্যা করেন যে, আত্মার দুঃখের মূল হলো ঈশ্বরের (হরির) থেকে বিমুখতা। এই বিমুখতাই আত্মাকে বিভ্রান্ত ও কষ্টের মধ্যে বন্দী করে রাখে। তাই, হরির সম্মুখতাই একমাত্র পরিপূর্ণ চিকিৎসা। কিন্তু প্রশ্ন আসে, এক আত্মা কীভাবে হরির সম্মুখ হতে পারে? তিনি বলেন —
प्रथम श्रद्धा युक्त गुरु की शरण जाइय प्यारे।
गुरु ते समुझिय श्याम सों संबंध अपनो प्यारे।
गुरु ते समुझिय मिलन की साधना भी प्यारे।

প্রথম শ্রদ্ধা যুক্ত গুরু কী শরণ যাইয় পেয়ারে।
গুরু তে সমুঝিয়ে শ্যাম সোঁ সম্বন্ধ অপনো পেয়ারে।
গুরু তে সমুঝিয়ে মিলন কী সাধনা ভী পেয়ারে।
শ্রদ্ধাপূর্ণ গুরু শরণাগতির গুরুত্বকে এখানে শ্রী কৃপালুজী মহারাজ তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন যে, গুরু ভক্তকে শ্যাম (ঈশ্বর)-এর সঙ্গে ভক্তের অন্তর্নিহিত সম্পর্ক উপলব্ধি করতে সাহায্য করেন এবং সেই সম্পর্কের মাধ্যমে ভক্তকে ঈশ্বরের সঙ্গে আধ্যাত্মিক মিলনের পথ প্রদর্শন করেন।

শ্রী কৃপালুজী মহারাজ তাঁর ভজন 'হরি-গুরু হ্যায় সমান' এ বলেন —
जीव को तो दे प्रथम, गुरु ही तत्त्वज्ञान ।
गुरु साधना करावे, करे दिव्य प्रेमदान।

জীব কো তো দে প্রথম, গুরু হি তত্ত্বজ্ঞান।
গুরু সাধনা করায়ে, করে দিব্য প্রেমদান।
অর্থ: "প্রথমে, গুরু আত্মার মধ্যে আধ্যাত্মিক জ্ঞানের সার সংক্ষেপ প্রেরণ করেন। এরপর, গুরু আত্মাকে আধ্যাত্মিক সাধনায় পথপ্রদর্শন করেন, এবং শেষপর্যন্ত তিনি আত্মাকে রাধা-কৃষ্ণের দৈবিক প্রেম প্রদান করেন।"

গুরুর এমন মহত্ত্ব যে তাঁর কৃপা গণনা সম্ভব নয় এবং তাঁর প্রতি পূর্ণ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করাও কঠিন। শ্রী কৃপালুজী মহারাজ এখানে একজন ভক্তের অনুভূতি যথাযথভাবে প্রকাশ করেছেন —
गुरु ने जो दिया ज्ञान गोविंद राधे। कोटि प्राण दान भी ना उऋण करा दे॥
গুরু নে যো দিয়া জ্ঞান গোবিন্দ রাধে। কোটি প্রাণ দান ভী না ওঋণ করা দে॥
অর্থ: "গুরু আমাদের ওপর দৈবিক জ্ঞান প্রদান করে এত গভীর ঋণী করে দিয়েছেন যে, তাঁর পদপঙ্কজে অসংখ্য জীবন উৎসর্গ করলেও আমরা এই ঋণ কখনো পূর্ণভাবে শোধ করতে পারব না।"

গুরু পূর্ণিমা উদযাপন: কৃতজ্ঞতা এবং ভক্তির একটি দিন

গুরু পূর্ণিমা এক গভীরতম পবিত্রতা ও আত্মিক কৃতজ্ঞতার দিন—একটি অপূর্ব সুযোগ, হৃদয় বিনম্রতায় নত করে গুরুচরণে প্রণতি নিবেদন করার। এই দিনটি শুধু একটি উৎসব নয়; এটি গুরু-তত্ত্বের স্মরণে, সেই দিব্য সত্তার প্রতি নিবেদনের নিঃশব্দ আহ্বান, যিনি আমাদের জীবনের অন্ধকার পথকে জ্ঞান ও ভক্তির জ্যোতিতে আলোকিত করেছেন। গুরুর অমিত কৃপা, তাঁর অন্তর্দৃষ্টি ও নিরবচ্ছিন্ন সান্নিধ্যের মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরপ্রেমের পথে ধাবিত হই। আনন্দ ও কৃতজ্ঞতার অশ্রু তখন অন্তর থেকে প্রবাহিত হয়, যখন আমরা উপলব্ধি করি—গুরুই সেই জ্যোতির্ময় পথপ্রদর্শক, যিনি আমাদের চেতনার গহ্বরে রাধা-কৃষ্ণের নিঃস্বার্থ সেবার মহান উদ্দেশ্য প্রতিস্থাপন করেন। গুরু পূর্ণিমা তাই শুধুমাত্র উৎসব নয়, বরং আত্মার ঈশ্বরাভিমুখ যাত্রায় গুরুর চিরন্তন উপস্থিতির এক পবিত্র স্মারক।

এই পবিত্র দিবস, গুরু পূর্ণিমা, ঐতিহ্যগতভাবে বিভিন্ন আধ্যাত্মিক কার্যকলাপের মাধ্যমে উদযাপিত হয়, যার মধ্যে কীর্তন একটি মহান উপায়—যেখানে শব্দরূপে ভক্তির আবেগ গুরুর প্রতি কৃতজ্ঞতায় রূপ নেয়। কীর্তন কেবল সংগীত নয়; এটি হৃদয়ের গভীরতম স্তর থেকে উৎসারিত সেই আত্মার আহ্বান, যা গুরুর পদতলে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করে। গুরু পূর্ণিমার শুভ অবসরে অখণ্ড সংকীর্তনে অংশগ্রহণ মানে হলো গুরুর প্রদত্ত দিব্য জ্ঞান ও প্রেমময় সেবার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন, এবং সেই চেতনার অনুরণন, যা ঈশ্বরের সঙ্গে মিলনের পথে ভক্তিকে প্রবাহিত করে। এইরূপ অনুষ্ঠান কেবল বাহ্যিক শ্রদ্ধা নয়, বরং গুরুর প্রতি এক আভ্যন্তরীণ আত্মিক চেতনার জাগরণ—যা আত্মাকে গুরুকৃপায় পরিপূর্ণ করে তোলে।